দ্বিপদী উপপাদ্য | ম্যাথমেটিক্স ২

দ্বিপদী উপপাদ্য আজকের ক্লাসের আলোচনার বিষয়। “Solving Problem of Binomial Theorem 01 [ দ্বিপদী উপপাদ্য ]” ক্লাসটি “ম্যাথমেটিক্স – ২ [ Mathematics – 2 ]” এর ৩য় অধ্যায়ের [ Chapter 3 ] অংশ। এই ক্লাসটি “মেকানিকাল টেকনোলজি [ Mechanical technology ]” কোর্সের [Course] যা “২য় সেমিস্টার [ 2nd Semester ] এর “ম্যাথমেটিক্স ২ [ Mathematics – 2 ]” এ পড়ানো হয়।

 

দ্বিপদী উপপাদ্য

 

প্রাথমিক বীজগণিতে, দ্বিপদী উপপাদ্য (বা দ্বিপদী বিস্তার ) একটি দ্বিপদী রাশির সূচকের বীজগাণিতিক সম্প্রসারণ বর্ণনা করে। এই উপপাদ্য অনুযায়ী, একটি (x + y)n আকারের বহুপদীকে কয়েকটি a xbyc আকারের রাশির সমষ্টি রূপে প্রকাশ করা সম্ভব, যেখানে b এবং c সূচকদ্বয় প্রত্যেকে অঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা ও b + c = n, এবং প্রতিটি রাশির সহগ a একটি নির্দিষ্ট ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা যার মান n ও b এর উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, n = 4 এর জন্য-

a xbyc রাশিতে a সহগটি দ্বিপদী সহগ বা নামে পরিচিত (দুটির মান একই)। পরিবর্তনশীল n এবং b এর জন্য এই সহগগুলোর মান প্যাস্কেলের ত্রিভূজ থেকে নির্ণয় করা যায়। এই সংখ্যাগুলো গুচ্ছ-বিন্যাসতত্ত্বেও পাওয়া যায়, যেখানে হচ্ছে n-সংখ্যক উপাদানের সেট থেকে b সংখ্যক উপাদানের সমাবেশের সংখ্যা। পদটিকে পড়া হয় “এন চুজ বি” (n choose b)

 

দ্বিপদী উপপাদ্য

 

দ্বিপদী উপপাদ্য এর ইতিহাস :

দ্বিপদী উপাপাদ্যের বিভিন্ন বিশেষ অবস্থা কমপক্ষে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীর আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। গ্রিক গণিতবিদ ইউক্লিড দ্বিতীয় সূচকের ক্ষেত্রে দ্বিপদী উপপাদ্যের উল্লেখ করেছিলেন। ছয়শত খ্রিষ্টাব্দেও ভারতে তৃতীয় সূচকের দ্বিপদী উপপাদ্যের প্রচলন থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

দ্বিপদী সহগগুলোকে k সংখ্যক বস্তুর মধ্যে n সংখ্যক বস্তুর সমাবেশের সংখ্যার দ্বারা প্রকাশের বিষয়টি প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদদের আগ্রহের বিষয় ছিল। এই সমাবেশ সংক্রান্ত সমস্যার প্রথম সূত্র পাওয়া যায় ভারতীয় গীতিকার পিঙ্গল (খ্রিষ্টপূর্ব ২০০) রচিত চন্দশাস্ত্র গ্রন্থে, যেখানে এর সমাধানের একটি উপায়ের উল্লেখ ছিল। দশম শতকের ভাষ্যকার হালায়ুধা এই পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করেন যা বর্তমানে প্যাসকেলের ত্রিভুজ নামে পরিচিত। ষষ্ঠ শতকের মধ্যে ভারতীয় গণিতবিদগণ সম্ভবত এটিকে অনুপাত হিসেবে প্রকাশ করতে জানতেন, এবং এই নীতিটির একটি পরিষ্কার বিবৃতি পাওয়া যায় দ্বাদশ শতাব্দীর ভাস্করের লীলাবতী লিপিতে। 

জানামতে দ্বিপদী উপপাদ্যের প্রথম প্রতিপাদন ও দ্বিপদী সহগের তালিকা পাওয়া যায় আল-করাজির একটি কাজে যা আল-সামাও’য়াল তার “আল-বাহির” এ উল্লেখ করেন। আল-করাজি দ্বিপদী সহগের ত্রিভুজাকার বিন্যাস বর্ণনা করেন এবং গাণিতিক আরোহ বিধির একটি প্রাচীন আকার ব্যবহার করে দ্বিপদী উপপাদ্য ও প্যাসকেলের ত্রিভুজের একটি গাণিতিক প্রমাণ প্রদান করেন।

পার্সি কবি ও গণিতবিদ ওমর খৈয়াম সম্ভবত উচ্চমাত্রার সূত্রটির সাথে পরিচিত ছিলেন, যদিও তার অনেক গাণিতিক অবদান হারিয়ে গিয়েছে। ইয়াং হুই ও চু শিহ-চিয়েহ এর ত্রয়োদশ শতকের গাণিতিক কাজে অল্প মাত্রার দ্বিপদী বিস্তৃতি সম্পর্কে জানা যায়। ইয়াং হুই এই পদ্ধতিটি আরও প্রাচীন একাদশ শতকের জিয়া জিয়ান এর লিপিতে উল্লেখ করেন, যদিও সেই লিপিগুলো এখন হারিয়ে গিয়েছে।

১৫৪৪ সালে, মিখায়েল স্টিফেল “দ্বিপদী সহগ” পদটির সূচনা করেন এবং দেখান যে কি করে প্যাসকেলের ত্রিভুজের সাহায্যে কে এর সাপেক্ষে প্রকাশ করা যায়। ব্লেইস প্যাসকেল তার Traité du triangle arithmétique (১৬৫৩) গ্রন্থে তার নামাঙ্কিত ত্রিভুজটি নিয়ে আলোচনা করেন। তবে, এই সংখ্যাগুলোর বিন্যাস ইতোমধ্যেই রেনেসাঁর শেষদিকে ইউরোপীয় গণিতবিদের মধ্যে পরিচিত ছিল, যাদের মধ্যে স্টিফেল, নিকোলো ফন্টানা টারটাগিলা ও সাইমন স্টেভিন অন্তর্ভুক্ত। 

সাধারণত আইজ্যাক নিউটনকে সাধারণীকৃত দ্বিপদী উপপাদ্যের কৃতিত্ব দেয়া হয়, যা যে কোন মূলদ সূচকের জন্য প্রযোজ্য।

 

 

দ্বিপদী উপপাদ্য নিয়ে বিস্তারিত :

 

আরও পড়ুন…

Leave a Comment